অনুসন্ধানী প্রতিবেদনঃসত্য-মিথ্যার মিশেল দিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে দস্যুতার কালিমা গায়ে লাগিয়ে পুরো দেশবাসীর কাছে একজন খলনায়ক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদকে।
সংবাদের সত্যতা যাচাই-বাছাই না করে গণমাধ্যমের লোকেরা প্রেসব্রিফিং এর বরাত দিয়ে ফলাও করে শাহেদের বিরুদ্ধে মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবাদ পরিবেশন করলেন। প্রকাশিত সংবাদে বলা হলো শাহেদ করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। কেউ জানতে চাইলো না,করোনা টেষ্টের ভুয়া রিপোর্ট পেয়েছে এমন কোন ব্যাক্তি আছে কিনা, এবং কেউ এ নিয়ে থানায় কোন অভিযোগ করেছেন কিনা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কেউ অভিযোগ করেছেন কিনা বা কোন সাংবাদিকের কাছে কোন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন কিনা? এমন কোন অভিযোগ কেউ পায়নি বা করেনি।
দ্বিতীয়ত- হাসপাতালগুলো শুধু রোগীর স্যাম্পল গ্রহন করে তা পাঠিয়ে দিতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। রোগীদের কাছে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষার ফলাফল পৌছে দিতো নিপসম। যদি ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট দিতে হয় তাহলে তো রোগীর কাছে মেসেজ যেতে হবে শাহেদের মোবাইল থেকে বা রিজেন্ট হাসপাতালের কারো মোবাইল থেকে। এমন কোন অভিযোগ তো পাওয়া যায়নি,শাহেদের বা রিজেন্ট হাসপাতালের কারো মোবাইল থেকে রোগীর কাছে টেস্ট রিপোর্ট গিয়েছে এমন কোনো তথ্য কারোর কাছে নেই তাহলে কেনো ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলো শাহেদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছে। শেষে প্রমান মিললো,শাহেদ কোন টাকাই নেয়নি।
শাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা কভিড-১৯ মামলার চার্জশীট বিশ্লেষন করলে দেখা যায়,প্রদত্ত চার্জশীটে উলেখ করা হয় শাহেদ দশ জন রোগীকে করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট দিয়েছে। বাস্তবতা হলো চার্জশীটে উল্লেখ করা দশজন রোগীর টেস্ট রিপোর্ট এসেছে নিপসম থেকে এবং এখনো ওই দশজন রোগীর টেস্ট রিপোর্ট সরকারী দপ্তর নিপসমের ওয়েব সাইটে দেখা যাচ্ছে। এতে প্রমানিত হয় শাহেদ কোন ভুয়া রিপোর্ট দেননি। শাহেদকে গ্রেপ্তারের সময়ে বলা হয়েছিলো,শাহেদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। দেশবাসীর সামনে তাকে একজন লুটতরাজ হিসেবে তুলে ধরা হলো, এমনকি এ ঘটনা উল্লেখ করে শাহেদকে কোন কোন পত্রিকা ও টিভি প্রতারক হিসেবেও আখ্যায়িত করলেন। অথচ কভিড-১৯ মামলায় শাহেদের বিরুদ্ধে যে চার্জশীলট আদালতে দাখিল করা হয়েছে ওই চার্জশীটে বলা হয়েছে শাহেদ করোনা চিকিৎসা বাবদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোন টাকা গ্রহন করেননি। তাহলে কেনো তার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার? কেন দিনের পর দিন তাকে কারাগারে কাটাতে হচ্ছে। কেন তার অবুঝ সন্তানদের শুনতে হচ্ছে তার বাবা একজন প্রতারক। আওয়ামী পরিবারের সন্তান বলে শাহেদ জাতীয় সেই মহাদুর্যোগের সময়ে প্রথম তার হাসপাতালে করোনা রোগীদের আশ্রয় দেন। সরকারের সাথে প্রথম চুক্তি করেন। এর খেসারতও দিতে হয়েছে তাকে। করোনার প্রথম দিকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারাযান শাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের এক কর্মকর্তা। শাহেদ নিজেও আক্রান্ত হন করোনায়।
কোন কোন গণমাধ্যম সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে শুধু মাত্র প্রেসব্রিফিং এর ওপর নির্ভর করে একটি সম্মানী বংশের সন্তান শাহেদকে প্রতারক পর্যন্ত লিখলেন। ১৯৯৩ সালে বিএনপির দাপটে যখন দারুনভাবে কোনঠাসা আওয়ামীলীগ সেই সাথে জামায়াতের প্রভাবে তটস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষিরা জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। সে সময়ে কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন । সাতক্ষিরায় প্রকাশ্যে কেউ জয়বাংলার উচ্চারনের করতে সাহস পেতোনা।ঠিক তখনই দলের সেই দুর্দিনে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সাতক্ষিরা জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব পালন করেছেন শাহেদের মা। এই আওয়ামী পরিবারের সন্তান শাহেদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তার জীবনকে অতিষ্ঠ করা হয়েছে,সামাজিকভাবে একটি ত্যাগী আওয়ামী পরিবারকে হেয় করা হয়েছে। শাহেদের বিরুদ্ধে যে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেটি উদ্ধার দেখানো হয়েছে ব্যস্ততম ঢাকা শহরের একটি সড়কে পরিত্যাক্ত পড়ে থাকা একটি গাড়ীর ছাদ থেকে। ঢাকা শহরের একটি মানবচলাচলের সড়কে পরিত্যাক্ত গাড়ীর ছাদে সপ্তাহের পর সপ্তাহ একটি অবৈধ অস্ত্র অক্ষত পড়ে থাকে?সেই অস্ত্র দিয়ে শাহেদকে ফাঁসানো হয়।
করোনার সেই সময়ে দেশের একাধিক প্রভাবশালী ব্যাক্তি যারা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রন করেন তারা সিন্ডিকেট করেছিলেন করোনারোগীদের প্রতি টেস্টের জন্য সরকারের কাছ থেকে তারা ৬ হাজার টাকা করে দাবী করবেন। সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাগাভাগি করবেন তারা।ঠিক তখনই শাহেদের ভূমিকায় তাদের সে অপতৎপরতা ভুন্ডল হয়ে যায়,শাহেদ করোনা চিকিৎসার জন্য সরকারকে হাসপাতাল দিয়ে দেওয়ার জন্য। একারনে পুরো সিন্ডিকেট ক্ষেপে ওঠে শাহেদের বিরুদ্ধে। শাহেদের সাথে প্রধানমন্ত্রী বা দুই চারজন বিশিষ্ট ব্যাক্তির পরিচয় ও ফেসবুকে ছবি থাকলেও বাস্তবে দেশের এতবড় সিন্ডিকেট মোকাবেলা করার স্বক্ষমতা শাহেদের নেই। যে কারনে শাহেদ চক্রান্তের স্বীকার হয়ে এখনো কারাগারে। দুষ্টুচক্রের রোষানলে শাহেদের বর্তমান অবস্থা। পরিস্থিতি ঘুরলে হয়তো ঘুরবে শাহেদের ভাগ্যে।
Leave a Reply